পোস্টগুলি

2021 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমার যাপনের দিনলিপি- দুই।।ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা

ছবি
ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা অমিত মাহাত  কনদিগের লে ঘরকে আলি। মালুম নাই। দমতক ভোখ পাইয়েছিল। আস্যেই সিনান নাহান তোর চুলহায় পুড়ুক,আদকাবরা পা রাখে  নেগা হাতে সাবান নিয়ে যা ডাহিনা হাতটাই  জলটা নিয়েছি। পাড়ায় হুরি উঠল। দু গাবল মুখে পুরেছি। তিন গাবলকে ফুরাবেক। ফৈটকা দিল হাঁকায় - এ বঅ লেখইয়া কাকা! চাঁড়ে আসো, আয়।  আমি শুধালি - ক্যানে রে? কি হইল! -মাঝকুলহিএ বেপক সিন চৈলছে বঅ । লিখবে তো চল্যে আসঅ!  -থাম রে, আর এক গাবল!  ফৈটকা দৌড় মারল। আর আমিও রঁদ বাদাড় ডেঁইঘে মাইনকা'র বাঁশ ঝাড়ে যাঁইয়ে রোগা রুঠুইনা ভুলির সাথে যাকে বলে বজড়। সেইরকম।হামদের পাড়ার লে নামোপাড়া মাঝকুলহি কমটা লয়।  যাচ্ছি, কলমের কাজ করি তো। যা'ই ঘটুক। এক কলম লেখার মসলা হবেই হবে। তাই আর কি, সঁকড়ি হাতে ঘামাঘামি দুশো মিটার দউড়।  কি কান্ড!  ই যে হামার পুটি ঝিএর গলা। দরমুখা বাখানে মুইক্তার শাউড়ির কামান খাবেক নকি রে!  -বলি হেঁ লো, আঁটকুড়ি! আজও তোর রোগনা ছাগলটা ছাড়্যে দিয়েঁছিস? তর ভাতার এতই নিকম্মা!  একটা বরহই অ নাই আর সুতলি অ নাই। নাই তো নাই। একটা পুঁয়াল দড়িও জুটল নাই ! -আজই পুচকিছে দিদি ।বাঁধায় ত ছিল এদ্দিন।  -বাঁধা থাকলে আমার বাঁধনামোর পাকব

আমার যাপনের দিনলিপি- দুই।।ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা

ছবি
ক্যাচলার নাম ছাগল পাঘা অমিত মাহাত  কনদিগের লে ঘরকে আলি। মালুম নাই। দমতক ভোখ পাইয়েছিল। আস্যেই সিনান নাহান তোর চুলহায় পুড়ুক,আদকাবরা পা রাখে  নেগা হাতে সাবান নিয়ে যা ডাহিনা হাতটাই  জলটা নিয়েছি। পাড়ায় হুরি উঠল। দু গাবল মুখে পুরেছি। তিন গাবলকে ফুরাবেক। ফৈটকা দিল হাঁকায় - এ বঅ লেখইয়া কাকা! চাঁড়ে আসো, আয়।  আমি শুধালি - ক্যানে রে? কি হইল! -মাঝকুলহিএ বেপক সিন চৈলছে বঅ । লিখবে তো চল্যে আসঅ!  -থাম রে, আর এক গাবল!  ফৈটকা দৌড় মারল। আর আমিও রঁদ বাদাড় ডেঁইঘে মাইনকা'র বাঁশ ঝাড়ে যাঁইয়ে রোগা রুঠুইনা ভুলির সাথে যাকে বলে বজড়। সেইরকম।হামদের পাড়ার লে নামোপাড়া মাঝকুলহি কমটা লয়।  যাচ্ছি, কলমের কাজ করি তো। যা'ই ঘটুক। এক কলম লেখার মসলা হবেই হবে। তাই আর কি, সঁকড়ি হাতে ঘামাঘামি দুশো মিটার দউড়।  কি কান্ড!  ই যে হামার পুটি ঝিএর গলা। দরমুখা বাখানে মুইক্তার শাউড়ির কামান খাবেক নকি রে!  -বলি হেঁ লো, আঁটকুড়ি! আজও তোর রোগনা ছাগলটা ছাড়্যে দিয়েঁছিস? তর ভাতার এতই নিকম্মা!  একটা বরহই অ নাই আর সুতলি অ নাই। নাই তো নাই। একটা পুঁয়াল দড়িও জুটল নাই ! -আজই পুচকিছে দিদি ।বাঁধায় ত ছিল এদ্দিন।  -বাঁধা থাকলে আমার বাঁধনামোর পাকব

আমার যাপনের দিনলিপি- এক

ছবি
এখন থেকে  নিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হবে আমার রোজকার যাপনের দিনলিপি। যা জঙ্গলমহলের ভিতরের আরেক জঙ্গলমহল।  আমাদের গ্রামজীবন।  এখানকার ভাষা, সংস্কৃতি।   আজ দ্বিতীয় পর্ব  ঝাড়ফুঁকের মন্ত্র    অমিত মাহাত  তখন আমার কত'ই বা বয়েস। খুব বেশি হলে দশ। তবে আমার জ্যেঠার মতে বয়স আর একটু কম। কয়মা প্রাইমারি স্কুলে তিন কেলাস টপকে চারে উঠেছি।   সেই  আমি সব সময় জ্যেঠার শাগরেদগিরি করতাম। জ্যেঠা যেখানে যেত, আমিও চলে যেতাম। বৈশাখের কুড়ি তারিখে কেঁদুয়ার শিব মেলা। সেবার আমার মামাবাড়ি থেকে গোরুর গাড়ি বোঝাই কচি পুই ডাঁটা কুমড়া আর পাক-বরাদ ফুঁইট গাড়ি আমাদের গাঁ মাথায়  এসে দাঁড় করিয়েছে অতুল মামা।  সন্ধ্যের মধ্যে মেলার মাঠে দোকান দেবে। পরের দিন দেদার বিক্রি-বাট্টা করে ফেরার পথে অবিক্কিরি সব  পুই ডিংলা  আমাদের এখানে  রেখে যাবে। এটাই দেখে এসেছি।  সেবার  অতুল মামার সাথে অরুন মামাও এসেছে। অরুন মামা এসেই জ্যেঠাকে বলল -তঅ বহনোই হামদের দেড় পন খড় লাগব্যেক যে- আর তুই ও চ হে কুটুম।  জ্যেঠা কাড়ার খড় বিচালি ছানি কাটছিল। বলল -   অ খড় লিবিস? তো লে হে।  আমি জ্যেঠার কাছে  বায়না ধরলাম। আমিও মেলাকে যাবো। আর গোরুর গাড়িতে সওয়ারি হয়েই যা

আমার যাপনের দিনলিপি

ছবি
এখন থেকে নিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হবে। আমার রোজকার যাপনের দিনলিপি।  যা জঙ্গল মহলের ভিতরের গভীর গহীনে আরেক জঙ্গল মহলের মুখোমুখি হয়ে তার রোজকার       যাপনের ছবি  ইতিপূর্বে কেউ সেভাবে লেখেন নি।  পড়ুন জঙ্গলমহলের কলমচি'র কলমে   আজ প্রথম পর্ব।  লেখা  পড়ুন। মতামত দিন।  মামা থাকলে মামাঘর অমিত মাহাত  লোককবি ভবতোষ সৎপথীর শিরি চুনারাম মাহাত কখন আমার ভিতর ঘরে সুগুম মার‍্যে ঘাপচি গাড়ে বসেছে মালুম নাই। কুসমি'রা ছাড়ে যায়। বাপ হতে পারলি নাই। মামা বনলি।  সে অনেকদিনকার কথা। তা থাক।  মাঝে মাঝে পৈসায় টান পড়ে। তখন খুখড়া বিকি। নাই তো গাছের কলা কাঁধি। চুনার চালচুলহা তো ছিলই নাই। খুখড়া বাঁধা দড়িও ছিল নাই। সে নাই থাক। হা ভাল, বললি বটে। আমারও তো নাই ।তবে আছে টা কী? গাছতল?  গাছতল না হলেও একটা ডুমৈর তল ছিলই। মানে মামাঘর।  আর ই নিয়েই একটা দাঁতকথা।  কে পহিলে বলেছিল নাই জানি। তো কথা হল, মামাঘর অ যা আর ডুমৈর তল অও তা। ক্যানে ডুমৈর তল! একদিন গরু খুঁজা খুঁজলি। বাঁশবাগান লে গরামথানের ফুটৈল আগপাতিয়া ধানবিল তক্কো।  মুরমুদের পিঁদাড় লে মান্ডিদের বাখুল তক্কো। বাগাল ঘর থাকতে ধাই বুড়ির ডেহর তক্কো। মেনতুক অড় আর মিলল কই। মিল

বাঁদনা পরবের খুঁটিনাটি কথা ঃঃ পর্ব এক

ছবি
  অমিত মাহাত  ভালা অহিরে  কতিধুরে আছে ভালা গুরু মাঁঞি বাপুরে  কতিধুরে আছে গুরু ভাই  আর কতিধুরে আছে অহিরা  বাঁদনা পরব গ  করব ত গরইআকা সেওআ।।  এই গানের মধ্য দিয়ে বাঁদনা পরবের শুরু বলা যায়। গানে প্রশ্নকর্তা জানতে চাইলেন -তাহলে বাঁদনা তো এসে গেল। তার সেবা দিতে হবে। জাগরণ পর্ব শুরু করতে হবে। কিন্তু সে পরব এখন কোথায় ?বা কতদুর এসে পৌঁছাল? আমাদের পরবের পরম পিতা ও মাতা এরাই বা কোথায় গুরু তুল্য মাতা পিতা কোথায় ?  গুরু ভাই ই বা কোথায়?  অহিরা তার উত্তরে জানান দিলেন এইভাবে  অহিরে এ এ  বড় গঙ্গায় আছে ভালা গুরু মাঁঞি বাপুরে  ছট গঙ্গায় আছে গুরু ভাই  আর, কুলহি মুড়ায় আছে অহিরা বাঁদনা পরব অ  করব ত গরইআ কা সেউআ।।  অর্থাৎ বাঁদনা পরব গ্রামের মাথা বা কুলহি মুড়া অব্দি এসে পৌঁছেছে। এখন আমাদের সকলকে কুলহি মুড়া অব্দি যেতে হবে। বাঁদনা পরবকে নিয়ে আসতে হবে। ভালা অহিরে এ  কইসে আনব ভালা গুরু মাঁঞি বাপুরে  কইসে আনব গুরু ভাই অ  আর কইসে আনব অহিরা বাঁধনা পরব অ  কইসে করব গরইআকা সেবা  এবার জবাবে গাওয়া হবে। গানের জবাব গানে।  অহিরে এ এ  দলায় চাপায় আনব গুরু মাঁঞি বাপুরে  কাঁধে চাপায় আনব গুরু ভাই  আর বাজ বাজনায় আনব বাঁদনা পরব অ

নদী সম্মোহন

ছবি
গল্প  অমিত মাহাত    অযোদ্ধাপতি শ্রী'রামচন্দ্রের দুর্দিন আসন্ন। বিপাকে পড়লে ব্যাঙের লাথি হজম করতে হয় বিষধর সাপকে। অযোদ্ধানগরীর রাজার দশা এখন সেই রকম। প্রতিদিনই প্রত্যুষে প্রাতঃকর্ম আর স্নান সারেন সরযূর জলে। নদীতীরে কত বসতি। ছবির মতো ভাসে সেসব জলদর্পনে ।    একদিন প্রভাতে তিনি চাক্ষুষ করলেন সরযূ নদী টিকে। উল্টোখাতে বইছে জলধারা। নদীর স্রোত এ যে  বিপরীতে প্রবাহমান। এ কীভাবে সম্ভব?  কিসের ইঙ্গিত  ? কী বোঝাতে চাইছে এ নদী?  রামচন্দ্রের কপালে তখন ঘামবিন্দু।   সকালের সূর্য আলো ঢেলেছে। নদীবুক চিকচিক করছে । সোনালি ঢেউ ওপার থেকে এপারে ছুটে এসে রামচন্দ্রের পদপ্রান্তে   এসে বাধা প্রাপ্ত হল। মুখে কিঞ্চিত দ্বিধা ও কিঞ্চিত হাসি এনে ঢেউএর উদ্দেশ্যে বললেন, "বল হে তরঙ্গায়িত  সমুজ্জ্বল, জলরাশি এত রূপ কে দেয়? " জলরাশি ছলাৎ করে উঠল। কোনও কথা না বলেই সে ঢেউ অন্যপ্রান্তে ফিরে গেল।  রামচন্দ্র বুঝলেন, তাঁর সময় খারাপ। সরযূর ঢেউ পর্যন্ত তাঁকে  অবজ্ঞা করল। রাজক্ষমতা, লোকবল কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করল না। সেদিন এমনি করে কেটে গেল। অযোদ্ধানগরীতে আজ তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার আর  কেউ নেই।  আজকাল চরম একাকিত্ব নামের অসু

ঘড়ি কিংবা বাবার গল্প

ছবি
 ইদানীং এক অদ্ভুত সমস্যা হচ্ছে। নিজেকে নিয়ে।  অন্যকে নিয়ে। খোদ এ পৃথিবীটাকেই মনে হচ্ছে এক বিরাট পাহাড়প্রমাণ সমস্যা। পৃথিবী বলছি বটে আবিশ্ব নয়।  যেখানে থাকি সেখানকার পৃথিবী। শুরুটা ঠিক কবে থেকে তা আমার পক্ষে বলা খুবই মুশকিল। মাথার ভেতর খালি জট পাকাচ্ছে। পাকিয়েই চলেছে। আমার হাত কাজ করে না। পা চলতে চায় না। শিরদাঁড়া সোজা হতে চায় না। মাথা বিট্রে করে। তখন কাঁচা খিস্তি দিয়ে ফেলি।  একদিন হল কী, স্টেশনে বসে আছি। ট্রেন আসছে না। একজন আমার পাশে এসে বসলেন। কব্জির মধ্যে সাঁটানো ঘড়ির দিকে কটমট করে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন -শুনছেন? কাইন্ডলি বলবেন এখন কটা বাজে? আমি হাতঘড়িতে নজর চালিয়ে কাঁচাপাকা দাড়ি চুলকে বললাম -খুব বেশি না। এই তো দুটো বেজে দশ।   -ইয়ার্কি মারছেন? এখন দুটো? সূর্য ডুবতে বসেছে। এখন দুটো? তিনি চটেছেন খুব।  --না মশাই। এই তো দেখুন, দুটো বেজে দশ।  --এ তো বন্ধ। ব্যাটারি ফুরিয়েছে।  --হবে হয়ত।  তারপর আর কোনও কথা নেই। উনি চুপ করে রইলেন। আমিও।  এখন দুটো বেজে দশ। আমার ঘড়িতে। অঢেল সময়। ঢালাও টাইম হাতে। চোখ বুজলেই, সান্যাল বাবু একদম সময় নেই। চলি হে পঞ্চানন। পাবলিকের ট্রেন কেন যে লেট করে চলে!  তখন সবে স্ক